প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনায় বা Awas Yojana বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন বুধবার সকালে একটি বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। ছাব্বিশ সালের বিধানসভা ভোটের আগে মাস্টারস্ট্রোক দিতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Bangla Awas Yojana status Check
বাংলা আবাস যোজনার খবর
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (Awas Yojana) খাতে বাংলার প্রাপ্য ৮,২০০ কোটি টাকা দুই বছরের বেশি সময় ধরে আটকে রেখেছেন মোদি সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কেন্দ্র ওই টাকা নাদিলে রাজ্য নিজের কোষাগার থেকে দেবে। বুধবার নবান্নের বৈঠকে স্থির হয়েছে। প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ পরিবারকে পাকা বাড়ি বানাতে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলা আবাস যোজনা কত টাকা
তিন বাড়ে একাউন্টে দেওয়া হবে সেই টাকা। প্রথম কিস্তিতে ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে, ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখের মধ্যে। পরের কিস্তিতে দেওয়া হবে ৪০ হাজার টাকা, আর শেষ কিস্তিতে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। আপাতত এই প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে বাংলা আবাস যোজনা (Bangla Yojana). তবে পরে ভেবেচিন্তে এই নামের পরিবর্তনও হতে পারে।
এমনিতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের জন্য ভোটের রাজনীতিতে বেসামাল বিরোধীরা, তা কখনও তাঁরা প্রকাশ্যে স্বীকার করেন, কখনও বা ঘরোয়া আলোচনায় বলেন। তা মোকাবিলার জন্য সন্দেশখালি পর্ব খুব একটা কাজে লাগেনি বলেই মনে করা হয়। সম্প্রতি আরজি কর চিকিৎসক পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে লক্ষ্মীর ভান্ডারকে মোকাবিলায় একটা চেষ্টাও করা হয়েছে বা চলছে।
এরই মধ্যে এই প্রকল্পের ১১ লক্ষের বেশি পরিবারকে সরাসরি বাড়ি বানাতে সরকার টাকা দিলে তা অনিবার্য প্রভাব ফেলতে পারে ভোটের ওপর। কারণ, সরকার তথা শাসক দলের কৌশলও পরিষ্কার একেবারে। তিন কিস্তির টাকা এমন ভাবে একাউন্টে দেওয়া হবে যাতে শেষ কিস্তির টাকা পাওয়ার ৭-৮ মাসের মধ্যে ছাব্বিশের বিধান্সভা ভোট চলে আসবে। ঠিক যে ভাবে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের বর্ধিত ভাতা ২ কোটি মহিলাদের ইকাউন্টে ঢুকেছিল।
সরকারের এক শীর্ষ আমলার কথায় ১১ লক্ষ উপভোক্তার অর্থ অন্তত ৪৪ লক্ষ মানুষ সুবিধা পাবেন। শাসক দলের গ্রামীণ জনভিত্তি মজবুত করতে যা ইতিবাচক অনুঘটকের কাজ করতে পারে। বড় ব্যাপার হলো, এই প্রকল্পের টাকা বাড়ি বানালে সেই বাড়ির বাইরে একটা ফলক লাগাতে হয়। সেই ফলকে লেখা হয়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (Yojana) আর্থিক অনুকূল্যে তৈরি হল এই বাড়িটি।
অনেকে মনে করেন যে রেশনের ব্যাগে বা কোভিডের টিকার সার্টিউফিকেটে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি দেওয়া হয়, এখানেও এখানেও উদ্দেশ্য তাই। রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়া। উদ্দেশ্য যদি তাই হয় তাহলে এ ক্ষেত্রে যে সকল বাড়ি তৈরি হবে তাতে রাজ্য সরকার অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে ফলক লাগাতে বলতেই পরে। তাতে বিষ্মিত হওয়ার কিছু থাকবে না। বিজেপির প্রশ্ন তোলার জায়গাও বিশেষ থাকবে না।
নবান্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, এবার উপভোক্তা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে চরম সতর্কতা বজায় রাখার কথা বলেছেন মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। কারণ, সরকারের মধ্যে দুই ধরনের উদ্বেগ রয়েছে। এক দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তা নিয়ে কেউ মামলা করে দিতে পারে আদালতে। সেক্ষেত্রে প্রকল্পের বাস্তবায়নে বাধা তৈরি হবে। এবং দুই অনিয়মের অভিযোগ উঠলে আসলে উদ্দেশ্যও সিদ্ধ হবে না।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সরকারের কাছে কত টাকা আছে? কারণ রাজ্যের কোষাগারের করুণ অবস্থারকথা কারও অজানা নেই। তার ওপরে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের বোঝা রয়েছে। নবান্ন সূত্রের মতে, অর্থ সংকট রয়েছে। সাড়ে ১১ লক্ষ পরিবারকে যদি ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে ১৪ হাজার কোটি টাকা দিতে লাগবে।
তবে সরকার কৌশলগত ভাবে এই দায় দুটি আর্থিক বছরের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চলতি আর্থিক বছরের বাজেট থেকে অর্ধেক টাকা বরাদ্দ করা হবে। বাকি টাকা বরাদ্দ করা হবে আগামী আর্থিক বছরের বাজেট থেকে। নবান্নের ওই সূত্র অনুযায়ী জানিয়েছে, বুধবারের বৈঠকে যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর তথা এসওপি ঠিক করা হয়েছে তা রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পেশ করা হবে। তার পর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সমস্ত খবর সবার আগে পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে পারেন।