পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের (Government Employees) খাটুনি বাড়ল। জানুয়ারি থেকে নয়া নিয়ম চালু হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে। আর সেই নিয়মের আওতায় রাজ্য সরকারি কর্মীদের চাপ বাড়ছে। আর নতুন বছর থেকেই আরও কড়া হচ্ছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে জারি করা হয়েছে নতুন একটি নির্দেশিকা। আর সেই নির্দেশিকা থেকেই জানা যায়, সরকারি কর্মীদের ফাঁকিবাজি রুখতে আগামী বছর থেকেই কড়া নিয়ম চালু হতে চলল।
New Rule For Government Employees
নতুন বছর থেকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য নতুন নিয়ম। এবার আর দফতরের ঠান্ডা ঘরে বসে সরকারি কাজের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারবেন না আধিকারিকেরা। এবার তাঁদের সশরীরে যেতে হবে মাঠে-ময়দানে। সরকারি আধিকারিকদের ফাঁকিবাজি ধরতে ডিজিটাল পদ্ধতির সুবিধা নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। চালু করা হচ্ছে নতুন অ্যাপ্লিকেশন। নতুন বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে রাজ্যের অর্থ দফতর। উক্ত বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে বলা যায়, ইতোমধ্যে নবান্নে একটি হেল্প ডেস্ক তৈরি করেছে। সমস্ত জেলাগুলির ব্লক এবং মহকুমা স্তর থেকে যে তথ্য জমা পড়বে প্রধানত তার ভিত্তিতে মনিটরিং করবে ওই ডেস্ক।
রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে কি বলা হয়েছে?
রাজ্য সরকারের (WB government) তরফে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে, মূলত যে এলাকায়, যে কাজ পরিদর্শনে আধিকারিকেরা যাবেন, সেই প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হবে স্বয়ংক্রিয় ‘জিও ট্যাগিং’। আর যা থেকে এটা স্পষ্ট যে, ঘরে বসে আধিকারিকরা রিপোর্ট জমা দিতে পারবেন না। কিন্তু কেন হঠাৎ এই পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার? যা জানা যাচ্ছে, ব্লক, মহকুমা এমনকি, জেলার প্রশাসনিক স্তরে থাকা আধিকারিকদের ফাঁকিবাজি রুখতে কড়া হয়েছে প্রশাসন।
বাংলায় এমন কিছু আধিকারিক রয়েছেন, যাঁরা কাজের অগ্রগতির বিষয়ে নিজেরা ওয়াকিবহাল থাকেন না। ফলে সরকারও বিষয়টি জানতে পারেন না যে, রাজ্যের যে প্রান্তে যেখানে যে কাজ শুরু হয়েছে, তা ঠিক কতটা এগোল। এর ফলে পরিকাঠামো উন্নয়নের মতো কাজ চলে ধীরগতিতে ও দীর্ঘদিন ধরে। দ্রুত সুফল আসে না। এই বিষয়টি নিয়ে সরকারের সর্বোচ্চ স্তরের বক্তব্য যে, প্রশাসনিক স্তরে যত্নের অভাবজনিত কারণেই সরকারি কাজ শুরু হলেও তা শেষ হচ্ছে দেরিতে।
বাংলার রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ বৃদ্ধি শীঘ্রই? জরুরি আপডেট সম্পর্কে জানুন
শ্লথ গতিতে কাজ হওয়ার কারণে ‘ফলো আপ’ প্রক্রিয়া ঠিকভাবে হচ্ছে না। ফলে মানুষ সময় মতো পরিষেবাও সময়ে পাচ্ছেন না। আর তার প্রভাব পড়ছে শাসক দলের উপর। রাজনৈতিক ভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। বিরোধীরা সরব হচ্ছেন। আর সেটাই এবার রুখতে চাইছে নবান্ন।
অর্থ দফতরের নির্দেশিকা প্রকাশের পাশাপাশি ২২ পাতার পদ্ধতি সংক্রান্ত অপর একটি নির্দেশিকাও আধিকারিকদের কাছে পাঠানো হয়েছে নবান্নের তরফে। আর সেখানে লেখার সঙ্গে মোবাইল স্ক্রিন -এর ছবি দিয়ে বোঝানো হয়েছে, কী প্রক্রিয়ায় কাজ করতে হবে। নতুন নিয়ম অনুসারে, রাজ্যের প্রত্যেক বিডিও, এসডিও, জেলাশাসক, প্রতিটি দফতরের আধিকারিকদের মোবাইল নম্বর দিয়ে সংশ্লিষ্ট অ্যাপে নাম নথিভুক্ত করতে হবে।
ওই অ্যাপে যে রিপোর্ট তাঁরা পূরণ করবেন, তা নিশ্চিত করতে হবে ছয় সংখ্যার ওটিপির মাধ্যমে। নিয়ম বলছে, কোনও কাজ শুরুর আগে যেমন সমীক্ষা রিপোর্ট পাঠাতে হবে, ঠিক তেমনই কাজ শুরু হলে তার নির্দিষ্ট সময়ান্তরে পরিদর্শন রিপোর্ট দিতে হবে সরকারকে। শুধু তাই নয়, যে কাজ হচ্ছে, তার ছবি তুলে আপলোড করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের জানুয়ারি থেকে DA বাড়ছে? উপর মহল থেকে জানা গেল
আগামী বছর থেকে এই নয়া প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে সরকার আর আধিকারিকদের কাছ থেকে কাজের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট চাইবে না। সেই কাজ অত্যন্ত সক্রিয়তার সঙ্গে আধিকারিকদের করতে হবে। আর গোটা কাজ হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। সংশ্লিষ্ট অ্যাপে আলাদা করে দেওয়া হবে দফতরভিত্তিক ক্ষেত্র। সেই অনুযায়ী তথ্য জমা দিতে হবে আধিকারিকদের।