পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা ডিএ (Dearness Allowance) আন্দোলনে দীর্ঘদিন ধরে শামিল। বারংবার নিজেদের দাবি তুলে ধরেছেন তাঁরা। সরকারের কাছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের দাবি ছিল বকেয়া ডিএ ও কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র বৃদ্ধি। যদিও রাজ্য সরকার সরকারি কর্মীদের ডাকে সাড়া দেয়নি। ফলে বহুবার আশাহত হয়েছেন তাঁরা। শেষমেষ রাজ্য সরকারি কর্মীরা আদালত-এর দ্বারস্থ হন। হাইকোর্ট থেকে মামলা স্থানান্তরিত হয় সুপ্রিম কোর্টে। এখনো পর্যন্ত সুপ্রীম কোর্টে পশ্চিমবঙ্গের ডিএ মামলা স্থগিত। সকলে অপেক্ষা করে আছেন কবে শীর্ষ আদালতের তরফে রাজ্য সরকারি কর্মীদের সুখবর দেওয়া হবে।
Government Employees Dearness Allowance
লম্বা সময় পেরিয়ে গিয়েছে যে পঞ্চম বেতন কমিশন সংক্রান্ত মামলা নিয়ে রীতিমতো চাপে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তবে এখনও পর্যন্ত মামলার কোনো নিষ্পত্তি হয়নি। এদিকে, ২০১৬ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে ক্রমাগত রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের লড়াই চলে আসছে (DA Case). যদিও, প্রথমে ডিএ মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে ওঠে। সেখানে রাজ্য সরকারী কর্মী দের হয়ে রায় দিয়েছিল আদালত। ২০২২ সালের ২০ মে প্রশাসন এর বিরুদ্ধে সরাসরি নির্দেশ দেওয়া হয় যে, তিন মাসের মধ্যে সকল রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া দ্রুততার সঙ্গে DA মিটিয়ে দিতে হবে। কিন্তু আদালতের এই নির্দেশ মানতে নারাজ ছিল রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলা
আর এই আবহে রাজ্য সরকার উচ্চ আদালতের DA রায়কে চ্যালেঞ্জ এক জানিয়ে রিভিউ পিটিশন দাখিল করে। যদিও, সেই পিটিশিন খারিজ হয়ে যায়। আর অন্যদিকে দেখা যায়, রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠন একেবারে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার দায়ের করে। সেই মামলার মধ্যেই পাল্টা ফের সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। সেই ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে এখনো পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা চলছে। ২০২৪ প্রায় শেষের পথে এসেছে। তাও ডিএ মামলা এখনও অধরা।
এদিকে, প্রথম থেকেই মহার্ঘ ভাতা মামলার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বিচারপতি ঋষিকেশ রায়। তাঁর অবসরগ্রহণের দিন আগামী বছর ৩১ জানুয়ারি। তাই সেক্ষেত্রে অবসরের আগে বিচারপতি ডিএ মামলার বিস্তারিত শুনানি করে তবেই তার নিষ্পত্তি করে যাবেন কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে সকলের মনে। এদিকে দেখা যায়, আরজি কর মামলার নিষ্পত্তির আগে অবসর নিয়েছেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। আর বিচারপতির অবসরের পর বেশ চিন্তায় সরকারি কর্মীরা। তাই সেই আবহে সম্প্রতি DA মামলা নিয়ে সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়। কি লিখেছিলেন তিনি?
সমাজমাধ্যমে কী লিখেছিলেন মলয় মুখোপাধ্যায়?
সম্প্রতি সমাজ মাধ্যমে কনফেডারেশন অফ স্টেট গভারমেন্ট এমপ্লয়েজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বিষয়টিকে উল্লেখ করে লিখেছিলেন, “আইনি দেবীর রূপ পরিবর্তন হয়েছে। দেবীর হাতে তরোয়ালের জায়গায় এবার সংবিধান এসেছে।” সেই সূত্র ধরে তিনি আরো লেখেন- এতদিন দেবীর চোখ বন্ধ ছিল ফলে DA মামলাটি দৃষ্টি গোচর হয়নি।” তিনি আশা করছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি ২০২৫ সালে DA মামলাটি শোনা হতে পারে।”
এর আগে সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতার মামলাটির সঙ্গে অন্যান্য ভাতার বিষয়টিও যুক্ত হয়েছিল। আর মামলাটি ‘এক্সটেন্সিভ হিয়ারিং’ পর্যায়ে ছিল। কিন্তু গত ১৫ জুলাই ডিএ মামলার শুনানির পর আদালতের নির্দেশনামায় বলা হয়, এই মামলার আবেদনের বিস্তারিত শুনানির প্রয়োজন আছে। এবার দেখার পালা সবশেষে কী রায় দেন প্রধান বিচারপতি। আর সেদিকেই তাকিয়ে আছেন সকল সরকারি কর্মীরা।