দিনকে দিন রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি (LPG Price Hike) নিঃসন্দেহে সাধারণ মানুষের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ভারতবর্ষের প্রত্যেক ঘরে অপরিহার্য রান্নার গ্যাস। আর রান্নার গ্যাস কিনতে গিয়ে বিরাট সমস্যার মুখে আমজনতা। কারণ, চড়া হারে দাম দিয়ে রান্নার গ্যাস কেনা নিতান্তই ঝক্কির ব্যাপার। তবে যা দেখা যাচ্ছে, রান্নার গ্যাসের দাম কমার বদলে রোজদিন বেড়ে যাচ্ছে। আবারো বাড়লো রান্নার গ্যাসের দাম। আর সেই সঙ্গে ভর্তুকির টাকা অমিলের ঘটনাও নজরে আসছে।
LPG Gas Price Hike Update
সাধারণ মানুষ বলছেন, রান্নার গ্যাসের দাম (LPG Gas Price Hike) যদি এই হারে বাড়ে, তাহলে জীবন ধারণ করা কঠিন হবে। কারণ, রান্নার গ্যাস প্রত্যেকদিন প্রত্যেক বাড়িতে দরকার হয়। এদিকে, ভারতবর্ষের মূল্যবৃদ্ধি মধ্যবিত্তের জন্য সমস্যার কারণ। কারণ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এর মধ্যে যদি রান্নার গ্যাস নিয়েও এইরকম চিন্তার পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে ভারতবর্ষের মানুষের কি করনীয়, তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। আর বিশেষজ্ঞদের মত, সরকারের উচিত এবার বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করা। কারণ এখানে সাধারণ মানুষের জীবনধারণের প্রশ্ন উঠে আসছে।
LPG Gas Price Hike and Subsidy Stopped
বর্তমানে যে পরিস্থিতি, কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি এলাকাতে ১৪ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম (LPG Price) দাম প্রায় ৮২৯ টাকা। সেখানে এখানকার সাধারণ গ্রাহকদের প্রতিটি সিলিন্ডারে পাওয়ার কথা ১৯.৫৭ টাকা এবং উজ্জ্বলাদের পাওয়ার কথা ৩০০ টাকা ভর্তুকি। কিন্তু এই নির্দিষ্ট হারে ভর্তুকি পাওয়ার কথা থাকলেও, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এই ভর্তুকির পরিমাণ প্রায়ই কম আসে অথবা দেখা যায় কোন কোন ক্ষেত্রে তো একেবারেই পৌঁছচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই সমস্যার মূল কারণ হল এলপিজি গ্রাহকদের কেওয়াইসি।
আসলে গ্রাহকদের কেওয়াইসি তথ্য সঠিকভাবে আপডেট না থাকা আর আধার লিঙ্কের ঘাটতি এই সমস্যার মূলের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। আর এর ফলে অনেক গ্রাহকের অ্যাকাউন্টেই ভর্তুকির অর্থ ঠিক ভাবে জমা হচ্ছে না। অল ইন্ডিয়া এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটরস ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বিজন বিশ্বাস বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন। বিজন বিশ্বাস জানিয়েছেন, বেশ কিছু এলপিজি গ্রাহকের ভর্তুকি সমস্যার কারণ হলো আধার লিঙ্ক ও কেওয়াইসি সংক্রান্ত ত্রুটি।
LPG Gas KYC Update
আবার, কিছু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, গ্রাহকদের নাম সাইবার অপরাধের কারণে ভর্তুকি তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এমন অভিযোগও সামনে আসছে। আর এই বিষয়ে সমস্ত তেল কোম্পানিগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ হলো। যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের সমস্যা পুনরায় ঘটে। বিশেষ করে রান্নার গ্যাস তথা এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটররা গ্রাহকদের কেওয়াইসি আপডেট করতে সহায়তা করছেন, যাতে গ্রাহকদের ভর্তুকির অর্থ সঠিক অ্যাকাউন্টে পৌঁছায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতবর্ষের যেসব গ্রাহক ভর্তুকি নিতে ইচ্ছুক নন, তাঁদের অবিলম্বে লিখিতভাবে এই তথ্য জানাতে হবে। কর্তৃপক্ষের আশা, নতুন এই পদক্ষেপে গ্রাহকদের সুবিধা হবে এবং ভর্তুকি পেতে আর কোনো বিভ্রান্তি থাকবে না। PMUY এর তেল কোম্পানিগুলো এবার থেকে গ্রাহকদের সহায়তা করার জন্য ইতিমধ্যেই ধাপে ধাপে শুরু করে দিয়েছে কেওয়াইসি আপডেট কর্মসূচি।
আর এর কারণ হল, ভারতের অনেক গ্রাহকের তথ্য এখনো পর্যন্ত ঠিকমতো আপডেট না হওয়ার জন্য ভর্তুকির অর্থ নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে পৌঁছাচ্ছে না। আবার বর্তমানে আধার কার্ড ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংযোগ নিশ্চিত করার জন্য এলপিজি গ্রাহকদের সাহায্য করতে চাইছে কোম্পানিগুলো। সেক্ষেত্রে আধার সংযুক্তির ক্ষেত্রে যে কোন অসামঞ্জস্যতা থাকলেও তা যত দ্রুত সম্ভব সংশোধন করা হচ্ছে।
ভারতবর্ষের এলপিজি গ্রাহকদের মধ্যে এক বছর ধরে এই সমস্যার প্রভাব এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, অনেকেই বর্তমানে ভর্তুকি পাওয়ার আশা ছেড়ে দিচ্ছেন। তবে এমতবস্তায় সরকারের দাবি, যদি গ্রাহকের কেওয়াইসি তথ্য সঠিকভাবে আপডেট থাকে এবং গ্রাহকের আধার সংযোগ হয়ে থাকে, তাহলে এলপিজি ভর্তুকি পাওয়া সম্ভব হবে।