প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (Awas Yojana) মাধ্যমে দেশের দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে ব্যক্তিরা মাথার উপর ছাদ পেয়েছেন। এখনো পর্যন্ত দেশের অনেক দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার রয়েছে যাদের মাথার ওপর শক্তপোক্ত ছাদ নেই, যাতে দেশের সকল মানুষ মাথার ওপর ছাদ পেয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারে, সেই ব্যবস্থাই করেছেন কেন্দ্রীয় সরকার। তবে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করেছে এমন অনেকজন যাঁরা এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার যোগ্য নয়, তেমন অভিযোগের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্প সাম্প্রতিক সময়ে বন্ধ রয়েছে।
Banglar Awas Yojana Update
এই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় “বাংলার আবাস যোজনা” প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার মাথার উপর ছাদ তৈরি করার গুরু দায়িত্ব নিয়েছেন। রাজ্যের কোষাগার থেকে টাকা দিয়ে রাজ্যের মানুষদের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার প্রতিষ্ঠা চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে একটি পরিবার কিছু রাজ্য সরকার ১ লাখ ২০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ করেছেন।
কারা এই বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার যোগ্য, কিভাবে নাম নথিভূক্ত করতে হবে, কোথায় গিয়ে এবং কি কি ডকুমেন্ট সহযোগে এই প্রকল্পের নাম অন্তর্ভুক্ত করা যাবে এই সমস্ত কিছুই থাকবে আজকের এই প্রতিবেদনে। ইতিমধ্যে রাজ্যের সমস্ত জায়গা ঘুরে যে সমস্ত অঞ্চলের এখনো কোন পরিবারের নির্দিষ্ট কোন বাড়ি নেই, সেই সমস্ত বাড়ির মালিকদের এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কাজ শুরু করে দিয়েছে বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পের সরকারি আধিকারিকরা।
আবাস যোজনায় নাম নথিভুক্ত করবেন কিভাবে?
বিভিন্ন জায়গা ঘুরে যোগ্য প্রার্থীদের এই প্রকল্পের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন, যাতে রাজ্যের কোন পরিবার গৃহহীন না থাকে। এই প্রকল্পের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হলে আপনি দুটি ভাবে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। প্রথমত অফলাইন মাধ্যমে। দ্বিতীয়ত, মুখ্যমন্ত্রীর হেল্প ডেস্ক নাম্বারে ফোন করে। অফলাইন মাধ্যমে বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হলে এই প্রকল্পের জন্য কোন আলাদা ফর্ম ফিলাপ করতে হবে না। আপনাকে একটি সাদা কাগজে বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পের জন্য একটি আবেদন পত্র লিখে জমা দিতে হবে ব্লক উন্নয়ন অফিসে।
কী কী ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে?
এছাড়া আবেদনপত্রের সাথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা করতে হবে। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো হল, আধার কার্ড জেরক্স, রেশন কার্ড জেরক্স, বর্তমান বাড়ির ছবি, পাসপোর্ট সাইজ ফটোকপি, বাড়ির ঠিকানার প্রমাণপত্র, ব্যাংকের পাসবুকের ছবি। অফলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে না চাইলে আপনি মুখ্যমন্ত্রীর হেল্প লাইন নাম্বারে ফোন করেও আবেদন জানাতে পারেন। তার জন্য আপনাকে সপ্তাহের সোমবার থেকে শনিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ফোন করার সুযোগ পাবেন। হেল্পডেস্কের যোগাযোগ নম্বর- ৯১৩৭০৯১৩৭০।
আপনার নাম প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হলো কিনা জানবেন কিভাবে :-
পশ্চিমবঙ্গ আবাস যোজনা প্রকল্পের স্ট্যাটাস চেক করার জন্য প্রথমে বাংলা আবাস যোজনা অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এরপর Know Your Grievance Status এই অপশনে ক্লিক করতে হবে।
যে নাম্বার দিয়েছেন আবেদন পত্রে সেই নাম্বার দিয়েই মোবাইল নম্বর দিয়ে স্ট্যাটাস চেক করতে হবে।
কিভাবে আপনার আবেদন যোগ্য হিসেবে গণ্য হবে?
১) পরিবারের কেউ অকৃষি প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত থাকে তাহলে সেই পরিবার এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেনা।
২) পরিবারের কোনো সদস্যের মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকার বেশি হলে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেনা।
৩) পরিবার আয়কর প্রদান করলে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেনা।
৪) একবার আবাস যোজনা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হলে আর দ্বিতীয়বার প্রকল্পে নাম লেখাতে পারবেনা।
৫) সরকারি কর্মচারী হলে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেনা।
৬) পরিবারের সদস্যদের পাকা বাড়ি থাকলে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেনা।
৭) পরিবারের কোনো সদস্যর তিন চাকা বা চার চাকার গাড়ি থাকা যাবে না।
৮) পরিবারের কেউ ইনকাম ট্যাক্স প্রদান করলে এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেনা।
আপনার এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার পর সরকারি আধিকারিকরা আপনার বাড়িতে সার্ভে করতে আসবে। এই প্রকল্পে দেওয়া শর্তগুলি আপনার আবেদনপত্রের সাথে মিলিয়ে দেখে আপনি যদি এই প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার জন্য উপযুক্ত হন তাহলে পরবর্তী পর্যায়ে আপনার নাম তালিকাভুক্ত করা হবে। নাম অধিভুক্ত হয়ে যাওয়ার পরে স্ট্যাটাস চেক করে দেখে নিতে পারবেন আপনারা নিজেই কিভাবে স্ট্যাটাস চেক করবেন সেটি উপরেই লিখে দেওয়া হয়েছে। যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হলে আপনার আবেদনপত্র দেওয়া ব্যাংক একাউন্টে এই প্রকল্পের নির্ধারিত টাকা পৌঁছে যাবে।
এখনো পর্যন্ত যারা আবেদন পত্র জমা করেছেন তাদের বাড়ির সার্ভে করতে রাজ্য সরকারি আধিকারিকরা, নতুন করে এখন আর আবেদনপত্র জমা নেওয়া হচ্ছে না তবে এই প্রক্রিয়ায় টাকা দেওয়ার পরেই আবার পুনরায় নতুন করে আবেদন পত্র জমা নেওয়া হবে। এমন আরো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবরের জন্য চোখ রাখুন এই পেজে।